দীপ্ত বিশ্ববিজয়ী। বর্শা তোলো কেন ভয়? কেন বীরের ভরসা ভোলো- ব্যাখ্যা কর।
আলোচ্য অংশটুকু বিষ্ণু দে'র 'চোরাবালি' কাব্যের অন্তর্গত 'ঘোড়সওয়ার' নামক কবিতা থেকে আলোচনা করা হয়েছে।
এ কবিতায় মূলত ঘোড়ার প্রতীকী তাৎপর্যের মধ্যে রয়েছে কবির বাল্যজীবনের ঘোড়া সংক্রান্ত স্মৃতির জাগৃতি, কিছু বাস্তব ঘটনার প্রতিচ্ছবি। বিভিন্ন ঘটনা, জনশ্রুতি, অধীত অভিজ্ঞতা, সাহিত্য পাঠ- সবকিছু এসে যুক্ত হয়েছে বিষ্ণু দে'র মানব ও ব্যক্তিচিত্তের মুক্তিবাসনার সঙ্গে। কেননা, যৌবনাবেগকে সৃষ্টিশীলতার শক্তিতে রূপান্তরের আকুলতাই কবি হৃদয়কে তীব্রগতি দিয়েছে। তবে এটাই ছিল বিষ্ণু দে'র জীবনদর্শনেরই একটি অংশ। তাইতো কবিকণ্ঠে ধ্বনিত হয়-
"দীপ্ত বিশ্ববিজয়ী, বর্শা তোলো কেন ভয়? কেন বীরের ভরসা ভোলো?"
তাছাড়াও 'ঘোড়সওয়ার' কবিতায় কবি আসন্ন বিপ্লবের পদধ্বনি শুনতে পেয়েছেন ঘোড়সওয়ারের প্রতীকরূপে। কবিতায় পুঁজিপতি শ্রেণির পদধ্বনি শুনে ভীত হলেও কবি শুনেছেন তার মধ্যে আসন্ন নবজাগরণের সুর। এ কবিতায় যে দূরদেশের বিশ্ববিজয়ী দীপ্ত ঘোড়সওয়ারের অশ্বক্ষুরধ্বনি বারবার শোনা যায়। সে বিপ্লবের পথে মুক্তির স্বরূপ-
"হালকা হাওয়া হৃদয় আমার ধরো হে দূরদেশের বিশ্ববিজয়ী দীপ্ত ঘোড়সওয়ার।”
পরিশেষে বলা যায যে, এ কবিতায় কবি মরীচিকার মতো যাকে কামনা করেন সে কোনো একক শক্তি নয়। এই শক্তি কোনো আলাদা শক্তি নয়- এই শক্তি অবিচ্ছিন্ন শক্তি। এ অবিচ্ছিন্ন শক্তিই বিপ্লবের দ্বারা সহজেই রূপান্তর ঘটাতে পারে।